কুবি প্রতিনিধি
সংবাদ প্রকাশের জেরে দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) প্রতিনিধি মোহাম্মদ ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. আমিরুল হক চৌধুরীর সই করা অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আদেশে বলা হয়, ‘‘গত ৩১ জুলাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের নবীনবরণ ও বিদায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন। উপাচার্যের ওই বক্তব্যকে ‘বিকৃত করে ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তিমূলক মিথ্যা তথ্য’ প্রচার করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনা করে বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের সভায় প্রক্টরিয়াল বডির প্রাথমিক প্রতিবেদন ও সুপারিশ অনুমোদিত হয়। সভায় প্রক্টরিয়াল বডির সম্মতিক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হলো।’’
এ বিষয়ে আমিরুল হক বলেন, ‘প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তে এই আদেশ দেওয়া হয়েছে।’
কোন আইনে বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নিয়মের কোনো ব্যত্যয় হয়নি।’ এ বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দিয়ে ফোন কেটে দেন আমিরুল হক।
প্রক্টরিয়াল বডির সুপারিশের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক প্রতিবেদন দিয়েছি। তবে আমরা কোনো সাংবাদিককে বহিষ্কারাদেশের জন্য সুপারিশ করিনি। আমরা শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারাদেশ দিয়েছি।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আব্দুল মঈনের ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে খুদেবার্তা পাঠানো হলে শুধু অফিসে গেলে কথা বলতে পারবেন বলে জানান তিনি। পরে রাত সাড়ে ৯টায় উপাচার্যের কার্যালয়ে গেলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
গত ৩১ জুলাই ‘দুর্নীতি হচ্ছে তাই বাংলাদেশে উন্নয়ন হচ্ছে’ শিরোনামে একটি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশ হয় ইকবাল মনোয়ারের।
এদিকে সাংবাদিককে বহিস্কারের ঘটনায় তীব্রনিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এর সহকারী মহাসচিব মো: সহিদ উল্লাহ মিয়াজী। তিনি বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে সাংবাদিকের বহিষ্কারাদেশ মুক্ত মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে হত্যার শামিল। বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে যে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ এনেছে এটা সম্পূর্ণ স্বৈরাচারীতা। সংবাদ প্রকাশ বা মত প্রকাশ শৃঙ্খলাভঙ্গের পর্যায়ে পড়ে না। এটা প্রতিহিংসার নগ্ন হস্তক্ষেপের বহি:প্রকাশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্ত সাংবাদিকতার অন্তরায়ের দলিল। কারণ কতৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ধাপগুলো অতিক্রম না করেই চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গেছেন।
তার এ বহিষ্কারাদেশ অবিলম্বে নি:শর্তভাবে প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৩, সকাল ১১:২৩
Discussion about this post