মোঃ আবদুল আউয়াল সরকার, কুমিল্লা
মানুষের পাঁচটি মৌলিক চাহিদার মধ্যে অন্যতম চিকিৎসা। এ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্যবিভাগসহ চিকিৎসকরা পড়েছেন নানা আলোচনা-সমালোচনায়।
আবার চিকিৎসাসেবায় কেউ কেউ চিকিৎসার ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণার দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছেন, দেশজুড়ে কুড়িয়েছেন সুনাম।
আমরা দেখেছি মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর খুব কাছের মানুষজনরা যখন চলে যায়, তখন পাশে থাকেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালগুলোয় তারা দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজেরা আক্রান্ত হয়েছেন, পরিবারকেও আক্রান্ত করেছেন। তবু দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াননি চিকিৎসকরা। অন্যকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেদের প্রাণ উৎসর্গ করেছেন।
চিকিৎসকরা বলেন, চিকিৎসকদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে প্রাইভেট চেম্বার বন্ধের কর্মসূচি পালন করছেন চিকিৎসকরা। আমাদের ব্যক্তিগত চেম্বার বন্ধ ছিল, কিন্তু কেউ রুগী দেখা,অপারেশন করা বন্ধ রাখেনি,দেশের সকল সরকারি হাসপাতালে আমাদের চিকিৎসকরাই সেবা দিয়েছে। চিকিৎসকদের ভুল বুঝবেন না,
জরুরি প্রয়োজনে অনেক চিকিৎসক নিজের রক্ত দিয়েও রুগীর জীবন বাচাঁতে ঝাপিয়ে পড়ে। চিকিৎসক কখনো রুগী মারার জন্য চিকিৎসা দেয়না।রুগী মারার জন্য কেউ চিকিৎসক হয়না। বরং যখনই কোনো রুগীর জীবন সংকটপুর্ন হয় তখন তাকে বাচিঁয়ে রাখার সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যায়,তখন তার নিজের পরিবার এর কথাও ভুলে যায়।
কিন্তু সবাইকে তো বাচাঁনো যায় না,যাবেনা। মানুষ একটা নিদিষ্ট সময় নিয়েই পৃথিবীতে এসেছে। যার সময় শেষ,তাকে সকল চেষ্টার পরেও আর ফিরিয়ে আনা যায় না,মানুষ তো অমর নয়। তখন কিন্তু চিকিৎসকরাও গোপনে চোখ মুছে। মানুষের সেবা দিতে গিয়ে আমরা নিজেরাও অনেক সময় অসুস্থ
হয়ে যাই,এরপরও আমরা মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
আমারা এত ঝুঁকি নিয়ে কাজ করি আমাদেরও পরিবার আছে। অনেকেই আমাদের নিয়ে অনেক কথা বলে যা ব্যথিত করে। যে যা বলুক রোগীর সেবাই আমাদের ধর্ম।’
চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিতে আসা নাছরিন আকতার বলেন, আমাদের যেমন পরিবার আছে। তেমনি চিকিৎসকদেরও পরিবার আছে। আমাদের যেমন অনেক কিছুতে বাধ্যবাধকতা আছে তেমনি চিকিৎসকদেরও বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাই আমাদের সবাইকে সমন্বয় করে চলতে হবে। পরিশেষে ডাক্তাররা আমাদের শেষ ভরসাস্থল।
ডাক্তার, নার্স,মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা জীবন বাজি রেখেই চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন অত্যন্ত সাহসের সঙ্গে।
এদিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫০০ শয্যার হাসপাতালে রোগী ভর্তি ছিল প্রায় ১৪০০। আউটডোরে রোগীর ভীড় ছিল চোখে পড়ার মতো। স্বাভাবিকের তুলনায় ৮গুন বেশি।
কুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন,মানুষের স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চিকিৎসক, নার্স,টেকনোলজিস্টসহ কর্মকর্তা কর্মচারিরা। একরাতে ৪০ সিজারিয়ান অপারেশনসহ স্বাভাবিকের চেয়ে ৮ গুন বেশী রোগীর সেবা দিয়েছে কুমেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
সেবা পেয়ে খুশি রোগী ও রোগীর অভিভাবকগন।
রেকর্ড গড়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে তিনি।
প্রকাশ: বুধবার, ১৯ জুলাই ২০২৩, রাত ০৮:৪৪
Discussion about this post