সিলেট ব্যুরো
এক দশক পর প্রকাশ্য রাজনীতিতে ফিরে আলোচনায় আসা জামায়াতে ইসলামী সিলেটে সমাবেশ করার অনুমতি পায়নি। সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে জানিয়ে অনুমতি দেয়নি সিলেট মহানগর পুলিশ। রাজধানীতে সমাবেশ করার এক মাস পর সিলেটে অনুমতি না পাওয়ায় সরকারের ‘জামায়াত নীতিতে’ পরিবর্তন এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নগরীর রেজিস্ট্রি মাঠে শনিবার দুপুরে সমাবেশ করতে চেয়ে গত ৫ জুলাই পুলিশ কমিশনারের কাছে আবেদন করে মহানগর জামায়াত। সমাবেশে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সভা, লিফলেট বিতরণে বাধা না দিলেও শুক্রবার রেজিস্ট্রি মাঠ থেকে সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের নিজেদের কর্মী দাবি করেছে জামায়াত।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব যোবায়েরসহ কয়েকজন নেতা রেজিস্ট্রি মাঠ পরিদর্শন করলেও আটকের ঘটনার পর তারা আড়ালে চলে গেছেন। সমাবেশে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মুজিবুর রহমানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল।
দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের শুক্রবার রাতে বলেছেন, অনুমতি না দিয়ে সংবিধান ও গণতন্ত্রের অবমাননা করেছে সরকার।
গত ২৪ মে ঘোষিত মার্কিন ভিসানীতিতে বলা হয়, বিরোধীদের সভা-সমাবেশে বাধা সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা বলে গণ্য হবে। বাধা দানকারীরা ভিসা পাবে না বলে নীতিতে জানায় যুক্তরাষ্ট্র। এর দুই সপ্তাহের মধ্যে রাজধানী ঢাকায় এক দশক পর সমাবেশ করার অনুমতি পায় যুদ্ধাপরাধের বিচারে কোণঠাসা হয়ে বহু বছর প্রকাশ্য রাজনীতি থেকে দূরে থাকা জামায়াত। গত ৭ জুলাই রাজধানীতে বিশাল মিছিল করে বিনা বাধায়। বিএনপি ঘোষিত এক দফা আন্দোলনে যোগ দেয়নি জামায়াত। এতে সরকারের সঙ্গে জামায়াতের যোগাযোগের গুঞ্জন তৈরি হয়।
দলটি বিভাগীয় ও বড় শহরের পর ঢাকায় সমাবেশ করার পরিকল্পনা করছিল। ২২ জুলাই চট্টগ্রামে, ২৯ জুলাই কুমিল্লায় এবং পরের মাসে খুলনা, রাজশাহী, রংপুরে সমাবেশের কর্মসূচি রয়েছে জামায়াতের। সিলেটে সমাবেশ করতে না পারলে, সেগুলোও হবে না। জামায়াত সূত্র বলছে, অনুমতি না পাওয়ায় প্রমাণ হয়েছে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ নেই।
সিলেট জামায়াতের নেতারা শুক্রবার রাতেও দাবি করেন, সমাবেশ হবে।
যদিও দলটির সূত্র বলেছে, পুলিশের সঙ্গে লড়াই করে সমাবেশের মতো বড় কর্মসূচি সম্ভব নয়। এতে শক্তিক্ষয় এবং নেতাকর্মীরা গ্রেপ্তার হবেন। সহিংসতার আশঙ্কা থাকায় সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি জানিয়ে মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ বলেছেন, কাউকে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না। বিনা অনুমতিতে সমাবেশ করার চেষ্টা করলে কঠোরভাবে দমন করা হবে।
শুক্রবার বিকেল থেকেই নগরীতে কড়া পাহারা বসিয়েছে পুলিশ। নগরীর বিভিন্ন মোড়ে পুলিশের অবস্থান ছাড়াও বিশেষ মহড়া দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিশেষ করে নগরীর রেজিস্ট্রি মাঠে জামায়াতের ডাকা সমাবেশস্থলের পাশে পুলিশের বিশেষ ক্রাইসিস রেসপন্স টিমের (সিআরটি) সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।
প্রকাশ: শনিবার, ১৫ জুলাই ২০২৩, রাত ১২:৪৮
Discussion about this post