লাকসাম প্রতিনিধি
কুমিল্লার লাকসামে পুলিশের অভিযানে আন্তঃজেলা অজ্ঞানপার্টির সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে তিনটি চোরাই অটোরিকশা এবং মোবাইল। তাদের বিরুদ্ধে লাকসাম থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) খন্দকার আশফাকুজ্জামান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামীরা জানিয়েছে খাবারে বিষ বা চেতনানাশক ঔষধ মিশিয়ে মানুষকে অজ্ঞান করে তাদের কাছ থেকে মালামাল লুট করে নিতো এই পার্টি। মিশন বাস্তবায়ন করার জন্য তারা বোরকা পরা অবস্থায় গর্ভধারনের ভান ধরা, অসুস্থতার ভান ধরা, কিংবা কোন কোম্পানির বস্ বা কর্মচারির পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে যাচ্ছিলো। পরে লাকসাম উপজেলার এক মিশুক(অটোরিকশা) চালককে ক্রিম বিস্কুট খাইয়ে অচেতন করে তার অটো রিকশা নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাবার পর অভিযানে নামে পুলিশ এবং এই চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো জানান,
গত ১৬ মে রাত ৮টায় নাঙ্গলকোট থেকে লাকসাম যাবার পথে দুলাল মিয়ার অটোরিকশায় ওঠে চার যাত্রী। ভাড়া ঠি করা হয় ১২০ টাকা। পথিমধ্যে আমদুয়ার এলাকায় পৌঁছালে যাত্রীরা চা খেতে দোকানে থামে। এসময় অনুরোধ করে মিশুক চালক দুলালকেও চায়ের সাথে ক্রিম বিস্কুট খাওয়ানো হয়। রাত সাড়ে ৮টায় দুলাল যাত্রীদের নিয়ে লাকসাম বাইপাস এলাকায় পৌঁছালে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এই সুযোগে ওই যাত্রীবেশী অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা চালকের দুলালের সাথে থাকা সাড়ে ৪ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়। পরে লাকসামের খুন্তা স্টীল ব্রীজের পাশে অজ্ঞান অবস্থায় দুলালকে ফেলে রেখে মিশুক রেখে চলে যায়। পরদিন ১৭ মে পথচারীরা দুলালকে রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার করে তার পরিবারের লোকজনকে খবর দেয় এবং কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া হয়।
পরে মিশুক চালক দুলাল লাকসাম থানায় মৌখিক অভিযোগ করলে লাকসাম থানার পুলিশের একটি দল তথ্য প্রযুক্তি ও বিভিন্ন উৎস হতে তথ্য সংগ্রহ করে লাকসাম থানার বিজরা বাজার এলাকা হতে আন্তঃজেলা মলম পার্টির দলনেতা মোঃ শাহজাহান (২৬) কে আটক করে। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, উক্ত দলনেতা মোঃ শাহজাহান এর গ্রুপে ৮-১০ জন সক্রিয় সদস্য রয়েছে। তারা কুমিল্ল জেলার বিভিন্ন উপজেলা, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় দীর্ঘদিন হতে বিভিন্ন কৌশলে খাবারে বিষ প্রয়োগ করে মিশুক, অটোরিক্সা চালকদের অচেতন করে সর্বস্ব চুরি করে নিয়ে যায়। পরে মুরাদনগর ও চান্দিনা উপজেলায় অভিযান চালিয়ে মিজানুর রহমান (৩১), নুর ইসলাম (২৪), মোঃ মিজান (২৩), মোঃ হানিফ (৩২), শিপন মিয়া (২৩), মোঃ সুমন আহমেদ (২৫)কে আটক করে। তাদের দেয়া তথ্য মতে চোরাই মিশুক গাড়ীসহ মোবাইল উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন উপজেলা একই প্রক্রিয়ায় চোরাইকৃত আরো ২টি মিশুক গাড়ী উদ্ধার হয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মোঃ শাহজাহান এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানায় একটি মাদক মামলা এবং শিপন মিয়ার এর বিরুদ্ধে ঢাকার বাড্ডা থানায় একটি মাদক মামলা রয়েছে।
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০২৩, রাত ০৮:৪৫
Discussion about this post