চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি
কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার ময়লার গন্ধে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। এতে মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী হাজার হাজার পরিবহনের যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। এছাড়াও আশপাশে বসবাসরত ৫ গ্রামের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ দূষিত গন্ধে দুর্বিসহ জীবন কাটাচ্ছেন। এই দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেতে স্থায়ী সমাধান চান মহাসড়কের যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
সরেমজিনে দেখা গেছে, দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন সড়কের দুই পাশে ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে ২০০৩ সালে গঠিত হয় চৌদ্দগ্রাম পৌরসভা। পর্যায়ক্রমে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে পদমর্যাদা লাভ করে। তবে প্রতিষ্ঠার ২০ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো পৌরবাসীর ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে প্রকাশ্যে, খোলা স্থানে। তাও আবার জনগুরুত্বপূর্ণ মাহাসড়কের পাশে। এনিয়ে স্থানীয় এবং যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে ডাম্পট্রাক ভর্তি ময়লা আবর্জনা অবাধে ফেলা হচ্ছে মহাসড়কের পাশে খোলা স্থানে। অথচ এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে হাজার হাজার যাত্রীবাহী পরিবহন। এছাড়াও নাটাপাড়া, বীরচন্দ্রনগর, বালুজুড়ি নোয়াপাড়া ও রামচন্দ্রপুরসহ আশপাশের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন এই পথে। ময়লার তীব্র গন্ধে ওই এলাকা দিয়ে চলাচল করা কষ্টকর। তাছাড়া শিশু ও বয়ষ্করা রয়েছেন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। অনেকেই চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
আবুল কালাম নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, বিকল্প সড়ক না থাকায় এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করতে হয়। ৫ মিনিটের রাস্তা পার হতে মনে হয়ে নাড়ি-ভুড়ি বের হয়ে যাওয়ার অবস্থা। বিষয়টি যেন দেখার কেউ নেই।
মোতালেব নামে এক ব্যক্তি জানান, প্রতিদিন মেয়েকে নিয়ে এ রাস্তা দিয়ে স্কুলে যেতে হয়। ময়লার স্তূপের কাছাকাছি এলে দূর্গন্ধ সহ্য করতে না পেরে প্রায়ই মেয়ে বমি করে ফেলে।
মদিনা পরিবহনের নিয়মিত যাত্রী স্বপন মিয়া বলেন, প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। ময়লার গন্ধ নাকে আসলেই বোঝা যায় নোয়াপাড়া এলাকা আমরা অতিক্রম করছি। প্রথম শ্রেণির একটি পৌরসভার খোলা স্থানে ময়লা ফেলা কোনোভাবেই প্রত্যাশা করা যায় না।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার মেয়র জিএম মীর হোসেন মিরু বলেন, নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলার জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে একাধিক চিঠি দিয়েছি। অর্থ বরাদ্দ পেলে অন্যত্র জমি ক্রয় করে সেখানে ময়লা সরিয়ে নেওয়া হবে।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হোসেন বলেন, খোলা স্থানে ময়লা ফেলা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। তাই মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলতে বারণ করেছি। আপনি যেহেতু বলছেন প্রয়োজনে আবারো মেয়র মহোদয়কে অনুরোধ করবো।
পরিবেশ অধিদপ্তর, কুমিল্লার উপ-পরিচালক মোসাব্বের হোসেন মুহাম্মদ রাজীব বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আপনার মাধ্যমে অবগত হয়েছি। খোঁজ খবর নিচ্ছি। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে পৌরসভার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রকাশ : বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৩, রাত ১১:২২
Discussion about this post