বুড়িচং (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
কুমিল্লায় প্রতারকের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে এক গৃহবধূ এখন বুড়িচংয়ে তার ছোটভাইয়ের বাড়িতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
বুড়িচং উপজেলার বাকশীমুল ইউনিয়নের ছয়গ্রামে ছোটভাই সুমনের বাড়িতে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন আয়েশা আক্তার।
কুমিল্লায় ফ্ল্যাট ক্রয় করতে গিয়ে আয়েশা আক্তার নামে এক নারী প্রতারকের খপ্পরে পড়েন। তার কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রতারক চক্র। দীর্ঘদিন ঘুরে ফ্ল্যাট না পেয়ে ৩০ লাখ টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে উল্টো নানা হয়রানির শিকার হয়েছেন তিনি।
ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামীর নাম রাশেদ হোসেন। রোববার বুড়িচং প্রেসক্লাবে তিনি সংবাদ সম্মেলন করেন। এ ঘটনায় কুমিল্লা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমলি আদালতে একটি মামলা করেছেন তিনি (সিআর মামলা নং- ২০৪/২০২১)। মামলার আসামি করা হয়েছে, তৌহিদ হোসেনের স্ত্রী বিলকিস আক্তার লাভলীকে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, লাভলী তার একটি রেডি ফ্ল্যাট বিক্রি করবে বলে আয়েশা আক্তারকে জানালে এটি কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরে সাক্ষীদের সামনে ৩০ লাখ টাকা লাভলীকে প্রদান করেন। টাকা নেওয়ার পর ওই ফ্ল্যাটটি আয়েশাকে না দিয়ে লাভলী তার স্বামীর নামে হস্তান্তর করেন।
পরে আয়েশা ফ্ল্যাটটি পাওয়ার জন্য বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও ফ্ল্যাট বা টাকা কিছুই ফেরত পাননি। সাক্ষীদের নিয়ে লাভলীর বাড়িতে গেলে তিনি ৩০ লাখ টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন এবং এক মাসের মধ্যে টাকা ফেরত দেবেন বলে ৩০ লাখ টাকার চেক প্রদান করেন। চেকটি পাওয়ার পর আয়েশা ব্যাংকে গেলে সেখান থেকে জানানো হয়, অ্যাকাউন্টে টাকা নেই।
পরে ব্যাংক কর্তৃক চেকটি ডিজঅনার হয়। পরবর্তী সময় আয়েশা আইনজীবীর মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করেন। লিগ্যাল নোটিশ পাওয়ার পর লাভলী আক্তার উল্টো আয়েশার বিরুদ্ধে চেক চুরির অভিযোগ করেন। নিরুপায় হয়ে আয়েশা কুমিল্লা আদালতে চেক ডিজঅনারের মামলা করেন।
এ বিষয়ে আয়েশা আক্তার বলেন, পূর্বপরিচিত লাভলীকে সরল বিশ্বাসে ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য ৩০ লাখ টাকা প্রদান করি। অথচ লাভলীর স্বামী আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা, অপবাদ দিয়ে একের পর এক হয়রানি করছে।
তিনি আরও বলেন, টাকা ফেরত না দিয়ে বরং আমার সন্তানসমতুল্য ভ্রাতুষ্পুত্র মিজানকে জড়িয়ে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ এনে আমার পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি করছে।
ইতিপূর্বে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত আয়েশার বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্তভার দেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)। বিষয়টি পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক মো. মোবারক হোসেন খান তদন্ত করে আয়েশার বিরুদ্ধে করা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন আদালতে।
আয়েশা আরও বলেন, আমি বুড়িচং প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে লাভলীর প্রতারণার কথা দেশবাসীকে জানাতে চাই। এ বিষয়ে অভিযুক্ত লাভলী আক্তার বলেন, বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন আছে, সেখানেই এর চূড়ান্ত ফয়সালা হবে।
প্রকাশ : ১১ এপ্রিল ২০২১, দুপুর ০২:৩৩
Discussion about this post