কুমিল্লা অফিস :
কুমিল্লায় বিমানবন্দর চালু করলে খুলে যাবে সমৃদ্ধির দ্বার। কুমিল্লা জেলা কর্মসংস্থান কার্যালয়ের তথ্যমতে প্রায় ১৫ লাখ বৈধ প্রবাসী কুমিল্লার। রেমিট্যান্সেও সর্বোচ্চ কুমিল্লা জেলা। ঢাকা-চট্টগ্রামের মাঝামাঝি জেলা কুমিল্লা। পরিত্যক্ত বিমানবন্দরের পাশে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল ইপিজেড।
বিমান যোগাযোগ চালু থাকলে এতে সহজে বিদেশি বিনিয়োগকারী আসতে পারবেন। খুলে যাবে সমৃদ্ধির দ্বার। এ ছাড়া বেশি প্রবাসী থাকায় বিমানবন্দর দ্রুত লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। ভৌগোলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ কুমিল্লা জেলার বিমানবন্দরটি বন্ধ ৪৪ বছর ধরে। সূত্রমতে ১৯৪০ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নেউরা-ঢুলিপাড়ার পাশে স্থাপিত হয় কুমিল্লা বিমানবন্দর। ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে সেনাবাহিনী এ বিমানবন্দর ব্যবহার করত। ১৯৬৬ সাল থেকে এ বিমানবন্দর সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
১৯৭৬ সাল পর্যন্ত বিমান ওঠানামা করে এ বন্দরে। তারপর তা বন্ধ হয়ে যায়। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ৭৭ একর ভূমির ওপর প্রতিষ্ঠিত কুমিল্লা বিমানবন্দর। রানওয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে গাড়ি প্রশিক্ষণের কাজে। সামান্য কিছু বাদ দিয়ে বেশির ভাগ এলাকা ঘাসে ঢাকা। কুমিল্লা ইপিজেডের ৩ নম্বর গেট রয়েছে বিমানবন্দর এলাকায়। এর আশপাশে আছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশেনের নেউরা, ঢুলিপাড়া, রাজাপাড়া, উনাইসার, দিশাবন্দ ও রসুলপুর। বিমানবন্দরের জন্য নির্মিত রাস্তা অবস্থিত ঢুলিপাড়া, রসুলপুর ও রাজাপাড়ার একাংশে। যাত্রী ওঠানামা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এ রাস্তা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানান, মাত্র ৩০ কোটি টাকার সংস্কারে বিমানবন্দরটি সচল হতে পারে।
এটি চালু হলে সংলগ্ন কুমিল্লা ইপিজেডে আরও বিদেশি বিনিয়োগ আসবে, কর্মসংস্থান হবে বিপুলসংখ্যক মানুষের।
কুমিল্লার অর্থনীতিতে যোগ হবে নতুন মাত্রা। বিমানবন্দরটি এখন আন্তর্জাতিক রুটের সিগন্যালিংয়ের কাজ করে। প্রতিদিনই ৩৫ থেকে ৪০টি বিমান এ সিগন্যাল ব্যবহার করে। বেশি চলাচল করে ভারতের অভ্যন্তরীণ রুটের বিমান। আগরতলায় যাওয়া বিমান এ রুটে চলে। এ ছাড়া রয়েছে ব্যাংকক, সিঙ্গাপুরের বিমান। এ বিমানবন্দর প্রতি মাসে সিগন্যালিং বাবদ আয় করছে ৩০-৪০ লাখ টাকা। বিমানবন্দরটি চালু করতে বেশি অর্থের প্রয়োজন নেই। বিপুল পরিমাণ জমি রয়েছে। জমি কেনা বা অধিগ্রহণের ঝামেলা নেই। প্রয়োজন রানওয়ে কার্পেটিং, ফায়ার সার্ভিস ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ারের জনবল। বর্তমানে এ বন্দরে ২০ জন লোকবল রয়েছে।
কুমিল্লা ইপিজেডের ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা যায়, বিমানবন্দর চালু হলে ইপিজেডে আরও বেশি বিদেশি বিনিয়োগকারী আসবেন, কর্মসংস্থান হবে বিপুলসংখ্যক মানুষের। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের যাতায়াতে এ বিমানবন্দর চালু করা জরুরি।
এদিকে দীর্ঘদিন বিমানবন্দরটি বন্ধ থাকায় ক্ষুব্ধ কুমিল্লার প্রবাসীরা। বিমানবন্দর থাকা সত্ত্বেও এর কার্যক্রম অসম্পূর্ণ থাকায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছেন কুমিল্লার মানুষ।
প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১, রাত ০৯:৪৪
Discussion about this post