নিজস্ব প্রতিবেদক :
কুমিল্লার সদর সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে ঢুকে দিনের বেলায় কর্মচারীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দলিল ঘষামাজা মামলায় নাজমুল হোসেন (৩৯) নামে আরও এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)। মঙ্গলবার গ্রেফতারের পর বুধবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। নাজমুল কুমিল্লা নগরীর ছোটরা এলাকার সাজু মিয়ার ছেলে।
এর আগের এই মামলার অন্যতম আসামি সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের দলিল লেখক আবুল বাসার সাজ্জাদ (৪০) আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে কুমিল্লার সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমলী আদালতের বিচারক ইরফান আহমেদ সাজ্জাদকে কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দেয়। সাজ্জাদ কুমিল্লা নগরীর ছোটরা এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে। এরপর মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি সাজ্জাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড আবেদন করলে গত ৭(ফেব্রুয়ারি) আদালত একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিআইডি’র পুলিশ পরিদর্শক আবুল কাশেম জানান, গত বছরের (১২ নভেম্বর)
কুমিল্লার সদর সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে ঢুকে দিনের বেলায় কর্মচারীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দলিল ঘষামাজার অভিযোগে দলিল লেখক আবুল বাসার সাজ্জাদের (৪০) নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানা এই মামলা দায়ের করা হয়। কুমিল্লার সদর সাব-রেজিস্ট্রারে কার্যালয়ের অফিস সহকারী মো. আবদুস সামাদ বাদী হয়ে এই মামলাটি দয়ের করেন। এরপর মামলাটির তদন্তের দয়িত্ব কুমিল্লা সিআইডিকে দেওয়া হয়।
মামলা তদন্ত করতে গিয়ে দেখা গেছে, সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে ঢুকে দিনের বেলায় কর্মচারীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দলিল ঘষামাজার কাজে অভিযুক্ত সাজ্জাদ এবং তার সহকারী নাজমুলসহ আরও ৪জন জড়িত রয়েছেন। সাজ্জাদ আদালতে আত্মসমর্পণ করলেও মঙ্গলবার নাজমুল হোসেন নামে তার এক সহকারীকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারেও কাজ করছে সিআইডি।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৩১ অক্টোবর (শনিবার) ছিল সাপ্তাহিক ছুটি। বেলা ২টার দিকে কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন অফিস সহকারী মো. আবদুস সামাদ। তার সঙ্গে ছিলেন মোহরাব মো. আজাদ ও পিয়ন আবদুল জলিল। এ সময় দলিল লেখক মো. আবুল বাসার সাজ্জাদ ও অজ্ঞাত আরও কয়েক ব্যক্তি তাদের দিকে অস্ত্র তাক করে। এরপর তারা আবদুস সামাদের কাছে থাকা রেকর্ড করে চাবি কেড়ে নেয়। এরপর দ্রুত রেকর্ড করে দরজার তালা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে। সে সময় অফিস সহকারী ওই করে দিকে এগোতে গেলে তাকে বাধা দেওয়া হয় এবং পিস্তল তাক করা হয়। এরই ফাঁকে দলিল লেখক সাজ্জাদ একটি দলিল নিয়ে রেকর্ড ক থেকে রেজিস্ট্রি অফিসের বাইরে যায়। কিছুণ বাইরে থাকার পর পুনরায় দলিলটি নিয়ে এসে পিয়ন জলিলের হাতে তুলে দেয় সে। একই সঙ্গে এই ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য হত্যা ও চাকরিচ্যুতির হুমকি দিয়ে যায়।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, ওই দলিল খুলে দেখা যায়, দলিল লেখক সাজ্জাদ যে দলিল নিয়ে বাইরে গিয়েছিল সেটি একটি আমমোক্তারনামা দলিল, যা গত ১৩ অক্টোবর নিবন্ধন করা হয়। এতে দলিলের প্রকৃতি পরিবর্তনসহ ৯ নম্বর পাতার বিভিন্ন বিষয় সংযুক্ত করা হয়।
প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১, রাত।১২:৫৫
Discussion about this post