কুমিল্লা অফিস:
কুমিল্লায় হত্যাকাণ্ডের বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও শাবাতের ঘাতকরা শনাক্ত হয়নি। একাধিকবার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তনসহ নানা আনুষঙ্গিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের বছর পেরিয়েছে।
নিহত শাবাত কুমিল্লা নগরীর বিষ্ণপুর এলাকার ডা. লিয়াকত আলীর ছেলে।
গত ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর শাবাতকে অপহরণের পর খুন করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় মামলার পর পরিবারের সদস্যরা আজও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দিকে তাকিয়ে আছে।
এদিকে ঘটনার বছর পেরিয়ে গেলেও ঘাতক শনাক্ত না হওয়ায় পরিবারসহ স্বজন ও এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা যায়, ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাতে বাসা থেকে বের হওয়ার পর শাবাত খানকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। পরে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়।
পর দিন ১ জানুয়ারি নগরীর পালপাড়া এলাকায় গোমতী নদী থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ২ জানুয়ারি শাবাত খানের বাবা ডা. লিয়াকত আলী খান বাদী হয়ে ১০ জনের নামে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।
এ সময় তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক শাহীন কাদির। তবে কোতোয়ালি থানায় মামলা করার ১০ দিন পর মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হয়।
বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছেন কুমিল্লা পিবিআইয়ের পরিদর্শক মতিউর রহমান।
এদিকে ছেলে হারিয়ে গত এক বছর ধরে পাগলপ্রায় শাবাতের মা কুমিল্লা মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ রাফিয়া আক্তার ডেইজি বলেন, আমরা ভালো নেই, আমাদের ছেলেকে হারিয়েছি। আমরা জানি স্বজন হারানোর কি যন্ত্রণা? আমার ছেলে সহজ সরল ছিল, গত এক বছর ধরে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দিতে তাকিয়ে আছি।
কবে শাবাতের খুনিরা আটক হবে? তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে? আমরা তদন্ত কর্মকর্তাকে সব ধরনের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছি, তবু খুনিরা অধরা, শুনেছি এ খুনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের হাত অনেক লম্বা, তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের আটক করতে পারছে না।
শাবাত খানের বাবা ডা. লিয়াকত আলী বলেন, গত ২০২০ সালের ১২ মার্চ শাবাত খানের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসে। যেখানে উল্লেখ রয়েছে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে তাকে। আমরা পুলিশকে সম্ভাব্য সব রকম তথ্য-উপাত্ত দিয়েছি। তবু কেন আসামিদের ধরতে পারছে না পুলিশ?
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান বলেন, মামলাটি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তবে আমরা এখনও নির্ভরযোগ্য কোনো ক্লু পাইনি; যার ফলে রহস্য উদ্ঘাটনে আমাদের সময় লাগছে।
তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে নানাভাবে বিশ্লেষণ চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি ঘটনার নেপথ্যে যা আছে শিগগিরই বেরিয়ে আসবে।
প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২১, রাত ০৬:০৪
Discussion about this post